বাংলাদেশের পক্ষেই কথা বলেছেন কুষ্টিয়ার এসপি: ১১ নাগরিক

বঙ্গবন্ধু ও বিপ্লবী বাঘা যতীনের ভাস্কর্য ভাঙচুর নিয়ে কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার এসএম তানভীর আরাফাতের বক্তব্য মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশের পক্ষেই দেওয়া বলে মনে করছেন দেশের ১১ নাগরিক।
রবিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তারা বলেন, 'আমরা মনে করি এই পুলিশ কর্মকর্তা মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশের পক্ষেই কথা বলেছেন। ভাস্কর্য ইস্যুতে দেওয়া তার বক্তব্য বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও অস্ত্র হাতে লড়াই করে পাওয়া বাংলাদেশের মৌল চাওয়াগুলোকে আরো একবার স্পষ্ট করেছে'।
এসপির বক্তব্যের বিরুদ্ধে দেওয়া হেফাজতে ইসলামের বক্তব্য একাত্তরের চেতনা বিরোধী অবস্থানকে স্পষ্ট করেছে বলে মন্তব্য করেন ১১ নাগরিক।
তারা বলেন, 'সবারই জানা আছে, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে পাকহানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রথম প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল বাংলাদেশ পুলিশ। রাজারবাগে ইতিহাস সৃষ্টি করা সেই বিদ্রোহী চেতনাই কুষ্টিয়ার এসপির বক্তব্যে লক্ষ্য করেছি আমরা। মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশের পক্ষে সচেতন এবং সুদৃঢ় অবস্থান তুলে ধরেছেন তিনি। এসপির বক্তব্যের বিরোধীতাকারী এ অংশটিকে আমরা খুব ভালোভাবে চিনি। এরা একাত্তরের পরাজিত অপশক্তি। বর্বর পাকিস্তানীদের প্রজন্ম। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পরিচয়ে সামনে আসে। কখনো জামায়াত শিবির। কখনো বা হেফাজত। এরা আজও বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না। এই কারণে এরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাঙার দুঃসাহস দেখিয়েছে। এরপর আর এদের কোনো ছাড় দেওয়া যায় না। এ কারণেই এসপি এই উগ্রবাদীদের চূড়ান্তভাবে সতর্ক করে দিয়েছেন বলে আমরা মনে করি'।
বিবৃতিতে তারা বলেন, 'অথচ আমরা দেখছি উগ্রবাদীরা সতর্ক না হয়ে উল্টো এসপির বক্তব্যকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করছেন। বিষদগার করছেন। হুমকি দিচ্ছেন। এর কারণ আর কিছু নয়, ভাস্কর্য ভাংচুর ও নেপথ্যে থাকা ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের ইস্যু থেকে জনগণের দৃষ্টি অন্য দিকে সরানোর কৌশলী চেষ্টামাত্র। এ অবস্থায় হুমিকদাতাদের গ্রেপ্তারের জোর দাবি জানাই আমরা'।
'একই সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানাই'।
নাসির উদ্দীন ইউসুফের পাঠানো বিবৃতিতে সারোয়ার আলী, রামেন্দু মজুমদার, আবদুস সেলিম, মামুনুর রশীদ, মফিদুল হক, শাহরিয়ার কবীর, মুনতাসীর মামুন, গোলাম কুদ্দুছ, হাসান আরিফ, আহকামউল্লাহ'র নাম উল্লেখ ছিল।
সম্প্রতি কুষ্টিয়ায় জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমান এবং বিপ্লবী বাঘা যতীনের ভাস্কর্য ভাঙচুর করা হয়। বাঘা যতীনের ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনায় ২১ ডিসেম্বর কুষ্টিয়ার কুমারখালীর কয়া মহাবিদ্যালয়ে এক প্রতিবাদ সভায় পুলিশ সুপার তানভীর আরাফাত বক্তৃতা করেন। তিনি বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের সংবিধান নিয়ে যারা প্রশ্ন তুলতে চান, তাদের জন্য তিনটি অপশন বা বিকল্প প্রস্তাব দেন।
তিনি বলেন, এক, উল্টাপাল্টা করবা হাত ভেঙে দেব, জেল খাটতে হবে। দুই, একেবারে চুপ করে থাকবেন, দেশের স্বাধীনতা ও বঙ্গবন্ধুর ইতিহাস নিয়ে কোনো প্রশ্ন করতে পারবেন না। তিন, আপনার যদি বাংলাদেশ পছন্দ না হয়, তাহলে ইউ আর ওয়েলকাম টু গো ইউর প্যায়ারা পাকিস্তান।