ঈদ-উল-আযহা বিভেদ ঘুচিয়ে দিক

ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত ঈদ-উল-আযহা বা কোরবানী। কোরবানী হচ্ছে আত্মত্যাগের অপার মহিমা। কোরবানী মানুষের মধ্যে সৃষ্ট দ্বন্দ্ব ভেদাভেদ ও পাপবোধকে দূরে ঠেলে দেয়। যার মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি লাভ করে মানুষ। হযরত ইসমাইল আ: এর আমল থেকে শুরু হওয়া কোরবানীর মূল বিষয় ছিল মানুষের ভেতরের পশুকে নিবৃত্ত করা। ধর্মপ্রাণ মানুষ সেই চেষ্টায় প্রতি বছর কোরবানী দিয়ে থাকেন। কালান্তরে কোরবানী ক্ষেত্রবিশেষে লৌকিতায় রূপ দিচ্ছে এক শ্রেণির মানুষ। তারা কোরবানী নিয়েও প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হচ্ছেন। কে কত বড় এবং কত টাকার পশু কিনেছে সেটা নিয়ে বাহাস চলে। লোক দেখানো এই কোরবানী সমাজে বিভেদ বাড়িয়ে দিচ্ছে। এই রেওয়াজ বন্ধ হওয়া দরকার। ঈদ-উল-আযহা বা কোরবানী সকলের দ্বন্দ্ব ও বিভেদ ঘুচিয়ে দিক সেটাই কামনা হওয়া উচিত।
মানুষের ভেতরের পশুত্বকে নিয়ন্ত্রণের জন্যই কোরবানীকে ফরজ করা হয়েছে। কিন্তু আমরা কি করছি? আমাদের ভেতরের অহম দূর করে আমরা কোরবানী দিতে পারছি ক’জন? কোরবানী দিতে গিয়েও যদি হিংসা, দ্বেষ, দম্ভ, ক্ষমতার ব্যবহার হয়, তাহলে সেটা লোক দেখানো কোরবানী ছাড়া অন্য কিছু হতে পারে?
অন্যদিকে রোজার ঈদ ও কোরবানী ঈদ সব মুসলমানরা এক সঙ্গে পালন করতে পারছে না। ঈদ নিয়েও মানুষের মধ্যে দুটি মত রয়েছে। একদল মুসলমান সৌদি আরবে সঙ্গে তাল মিলিয়ে রোজ ও ঈদ পালন করেন। অন্যদিকে বেশিরভাগ মুসলমান সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত রোজার ঈদের পরদিন এবং কোরবানীর ঈদে হজে¦র পরদিন পালন করে। ঈদ আয়োজন নিয়ে এই মত ও পথ এক হওয়া উচিত।
বরিশালে আজ শনিবার কোরবানী ও ঈদের নামাজ পড়বে ২০ হাজার পরিবারের লক্ষাধিক মুসল্লি। এভাবে সারা দেশে অনেক মুসল্লিরা আগাম ঈদ কিংবা সৌদির সঙ্গে তাল মিলিয়ে ঈদ পালন করবে। এরা চট্টগ্রামের চন্দনাইশ এলাহবাদ জাহাগীরিয়া শাহ্সুফি দরবার শরীফের অনুসারী। পৃথিবীর কোন প্রান্তে চাঁদ দেখা গেলে তার সাথে তাল মিলিয়ে রোজা, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা সহ যাবতীয় ধর্মীয় অনুশাসন পালন করেন তারা।
সারা বিশে^ যেন একই রেওয়াজে রোজা, ঈদ ও কোরবানী পালন করা হয়। ভেতরের পশুকে কোরবানী দিয়ে মানুষের মধ্যে ভ্রাতিৃত্ববোধ দৃঢ় হোক। ঈদ-উল-আযহা আমাদের মনের মধ্যে সৃষ্ট সকল দ্বন্দ্ব ও বিভেদ ঘুচিয়ে দিক।