নারায়ণগঞ্জে আড়ত দখলকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ: গুলিবিদ্ধসহ আহত ২০

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে আড়ত দখল ও প্রভাব বিস্তার নিয়ে স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের সাওঘাট এলাকায় এই সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে রাফি আহমেদ স্বপন ও রাজু ভূঁইয়া গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশের সাওঘাট এলাকায় অবস্থিত বিসমিল্লাহ আড়তকে কেন্দ্র করে ব্যবসায়ী মুজিবর রহমান ও জাপান-বাংলাদেশ গ্রুপের চেয়ারম্যান সেলিম প্রধানের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। মুজিবর রহমান দাবি করেন, সেলিম প্রধানের জমি তিনি ১০ বছরের চুক্তিতে ভাড়া নিয়ে আড়ত গড়ে তুলেছেন। অন্যদিকে সেলিম প্রধান অভিযোগ করেন, ভুয়া চুক্তিনামার মাধ্যমে জমি দখল করেছেন মুজিবর রহমান।

এই বিরোধের জেরে স্বেচ্ছাসেবক দলের রফিকুল ইসলাম ও ছাত্রদলের মাসুদুর রহমানের সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। মঙ্গলবার দুপুরে রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি মিছিল বের হলে, সেলিম প্রধানের বাড়ি থেকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। এর পরপরই উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পালটা ধাওয়া, গুলিবর্ষণ এবং সংঘর্ষ শুরু হয়।

সংঘর্ষ চলাকালে সেলিম প্রধানের একটি জিপগাড়ি ও ১০টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এতে সাওঘাট এলাকার গাউছিয়া মার্কেট, হাজী শপিং কমপ্লেক্সসহ আশপাশের দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। স্থানীয়দের মধ্যে চরম আতঙ্কের সৃষ্টি হয়।

সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে পৌঁছে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে যৌথ বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, "আমরা শান্তিপূর্ণ মিছিল করছিলাম। কিন্তু অতর্কিতে সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়।" অপরদিকে ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি মাসুদুর রহমান দাবি করেন, "আমার লোকজনের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। গুলিবিদ্ধসহ অনেকে আহত হয়েছেন।"

রূপগঞ্জ সার্কেলের এএসপি মেহেদী ইসলাম জানান, সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ না পেলেও অস্ত্র উদ্ধারে কাজ চলছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইফুল ইসলাম বলেন, "এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আড়তের প্রকৃত মালিক নির্ধারণে উচ্চ আদালতের সহায়তা নেওয়া হবে।"