বরগুনা সদর উপজেলার ১নম্বর বদরখালী, ২নম্বর গৌরিচন্না ও ৩নম্বর ফুলঝুড়ি ইউনিয়ন মিলিয়ে (ফুলঝুড়ি) ইউনিয়ন ভূমি অফিস।
দীর্ঘ দিন ধরে এখানে অবাধে ঘুষ বাণিজ্য চললেও রহস্যজনক কারণে কর্তৃপক্ষের কোনো ভূমিকা নেই। প্রমান পেলেও দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাও নিচ্ছেন না জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
এ ইউনিয়ন ভূমি অফিসে দাখিলা, দাগ-খতিয়ান ও মিউটেশনের তথ্য সরবরাহে ঘুষ না দিলে ঘুরতে হয় দিনের পর দিন। অবশেষে ধার্যকৃত টাকা দিয়ে কাজ সম্পন্ন করতে হয়।
বুধবার (২৯ মে) সকালে ও মঙ্গলবার (২৮ মে) দুপুরে সরেজমিনে ঘুরে ফুলঝুড়ি ভূমি অফিসে গেলে দেখা যায়, ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ রশিদে শাহ-জাহান বিশ্বাসের দাখিলায় ৮৮ টাকা লেখা। কিন্তু রাখা হয়েছে ১০০ টাকা। এরআগে সোমবার (২০ মে) তারাবানু, রুনু, মাঝেদা ও ফারুক প্রত্যোকজনের দাখিলা রশিদে ২০ টাকা লেখা থাকলেও তাদের কাছ থেকে জন প্রতি ২০০ টাকা করে মোট ৮০০ টাকা রাখা হয়েছে।
সম্প্রতি বদলী হয়ে আসা ইউনিয়ন ভূমি সহকারী তহশিলদার মো. শামছুল হক যোগদানের পর ঘুষ বাণিজ্য প্রবল বেড়েছে। এখানে একই পদে থাকা প্রভাষ চন্দ্রকে ঘুষ নেয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগে অন্যত্র বদলী করা হয়েছে।
ওই অফিসের ভূমি উপ-সহকারী আবদুল হালিম, অফিস সহায়ক আবু জাফর, লোকমান ও পারভিন আক্তার মিলে বিভিন্ন ভাবে কাগজপত্র দেখানোর নাম করে জনসাধারণের কাছ থেকে অতিরিক্ত ২০০ টাকা করে আদায় করে আসছেন। অতিরিক্ত টাকা নেয়ার কথা স্বীকারও করেছেন পারভিন ও আবু জাফর।
দাখিলা কাটতে আসা ফুলঝুড়ি ইউনিয়নের বাসিন্দা মোঃ রফিক হাওলাদার জানান, অনেক আগে থেকেই এখানে ঘুষ বানিজ্য চলমান। আমরা যদি প্রতিবাদ করি তাহলে কোনো কাজ সহজে হবেনা। তাই ঘুষ দিয়েই কাজ করি।
অভিযুক্ত তহশিলদার মো. শামছুল হক তার ঘুষ বানিজ্য চাঁপা দিতে সংবাদকর্মীদের ম্যানেজ করতে গিয়ে ব্যর্থ হয়েছেন।
বরগুনা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রুবাইয়া তাছনিম জানান, বরগুনার কোনো ভূমি অফিসে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হয়না। যদি প্রমান পাওয়া যায় তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।
বরগুনা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) জালাল উদ্দিন ভোরের আলোকে জানান, ফুলঝুড়ি ভূমি অফিসের বিষয়টি জেনেছি। তাছাড়া ভূমি অফিসের দুর্নীতি আপনাদের দেখার বিষয় না। আমাদের লোকজনের ব্যাপারে আমরা বুঝবো।
বরগুনা জেলা প্রশাসক (ডিসি) কবীর মাহমুদ ভোরের আলোকে জানান, এসব অভিযোগের ব্যাপারে এসিল্যান্ট ও জেলা রাজস্বর সাথে যোগাযোগ করুন তারা ব্যবস্থা নিবে। যদি তারা ব্যবস্থা নিতে গাফলতি করে তখন আমাকে জানাবেন।
উল্লেখ্য, বরগুনা সদর উপজেলায় মোট ৫ টি ভুমি অফিস রয়েছে।
What's Your Reaction?






