বরিশালে গৃহকর্মী নির্যাতনের ৩ দিন পর গৃহকর্তৃর বিরুদ্ধে মামলা

বরিশালে গৃহকর্মী নির্যাতনের ৩ দিন পর গৃহকর্তৃর বিরুদ্ধে মামলা

বরিশালে এক শিক্ষকের বাসায় কিশোরী গৃহকর্মী নির্যাতনের ঘটনায় ৩ দিন পর থানায় মামলা হয়েছে। নির্যাতনের শিকার কিশোরী মরিয়ম আক্তারের (১৪) চাচা কামরুল ইসলাম বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেন। 


মঙ্গলবার নির্যাতনকারী গৃহকর্তৃ রিনা বেগমকে একমাত্র আসামী করে  বিএমপি’র কোতয়ালী মডেল থানায় এই মামলা দায়ের করা হয়।
কোতয়ালী মডেল থানার ওসি জানান, মামলায় কিশোরীকে নির্যাতনের অভিযোগ করা হয়েছে। অপরদিকে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে আশ্রিত কিশোরীকে গতকাল আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। মামলার আসামী গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। 

নির্যাতনের শিকার মরিয়ম নেত্রকোনার দুর্গাপুর এলাকার রফিকুল ইসলামের মেয়ে। বাবা-মাসহ পরিবারে দায়িত্বশীল ব্যক্তি না থাকায় মরিয়মকে শিক্ষক হুমায়ুন কবিরের মেয়ে তমার মাধ্যমে গত ২ জুলাই ওই বাসায় কাজে নিয়োগ দেয় হয়। শুরু থেকেই তাকে নির্যাতন করা হতো বলে অভিযোগ ওই কিশোরীর। সব শেষ অর্থ ও স্বর্নালংকার চুরির অভিযোগ তুলে গত ১২ নভেম্বর (শুক্রবার) রাত সাড়ে ১১টার দিকে ওই কিশোরীকে প্রকাশ্যে রাস্তায় চুলের মুঠি ধরে পদদলিত করাসহ ব্যাপক শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে শিক্ষক হুমায়ুন কবির ও তার স্ত্রী রিনা বেগমের বিরুদ্ধে। প্রতিবেশীদের মাধ্যমে খবর পেয়ে ওই রাতেই কিশোরীকে উদ্ধার করে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে প্রেরণ করে কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশ। তবে নির্যাতনকারী দম্পতি চট্টগ্রাম মেট্রো পুলিশে কর্মরত এক অতিরিক্ত উপ-কমিশনারের শ্বশুর-শ্বাশুরী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে গরিমসি করে কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশ। ওইদিন নির্যাতনের সময় ওই পুলিশ কর্মকর্তা শ্বশুরালয়ে ছিলেন। তার স্ত্রী তমা (শিক্ষকের মেয়ে) এবং গৃহকর্তা নগরীর সাগরদী ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শিক্ষক হুমায়ুন কবিরও ওই কিশোরীকে শারীরিক নির্যাতন করতো বলে অভিযোগ করেন ওই কিশোরী। 

এ খবর গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে বাধ্য হয়ে ঘটনার ৩ দিন পর গতকাল মঙ্গলবার নির্যাতনের শিকার কিশোরীর চাচা কামরুল ইসলামের অভিযোগ মামলা হিসেবে গ্রহণ করে কোতয়ালী থানা পুলিশ। মামলায় তাকে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ করা হয়েছে। আসামী করা হয়েছে একমাত্র শিক্ষকের স্ত্রী রিনা বেগমকে। 
কোতয়ালী মডেল থানার ওসি মো. নুরুল ইসলাম জানান, কিশোরী গৃহকর্মীকে নির্যাতনের অভিযোগে শিক্ষকের স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। নির্যাতিতা শিশুটিকে রাখা হয়েছে পুলিশের ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে। ওই মামলায় ভুক্তভোগী হিসেবে কিশোরীকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। মামলার অভিযোগ তদন্ত করাসহ আসামী গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।