বরিশালে জমি নিয়ে বিরোধ,রাতে দেয়াল নির্মাণ :প্রকৃত দাবীদার ঘুরছেন দ্বারে দ্বারে

প্রায় ৫০ শতাংশ জমি নিয়ে ত্রিপক্ষীয় বিরোধ। এক পক্ষ জমি দখলে। অপর দুই পক্ষ নেই অবস্থানে। এদের এক পক্ষ মাস্তান ভাড়া করে রাতের আঁধারে জমি দখলে নিয়ে রাতারাতি করে ফেলেছেন সিমানা প্রাচীর। দখল পাকাপোক্ত করতে দিনরাত পাহাড়া দিচ্ছে ভাড়াটে মাস্তানরা। এ ঘটনায় থানা পুলিশের কাছে অভিযোগ দেয়া হলেও রাতের আঁধারে দখলদার পার্টির অর্থ ও প্রভাবের কারনে কাছে চাপা পড়ে যায় সব কিছু। এদিকে আগে থেকে জমির দখলে থাকা পরিবারের এক মাত্র ছেলেকে গত ৪ দিন ধরে নিখোঁজ রয়েছে। জমি জবরদখলের সাথে ওই যুবককের নিখোঁজের যোগসূত্র থাকতে পারে বলে সন্দেহ তার পরিবারের।
আমমোক্তারনামা বলে গত ২৮ জুলাই রাতে ভাড়াটে মাস্তান নিয়ে নগরীর ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের সিএন্ডবি রোডের বিরোধীয় প্রায় ৫০ শতাংশ জমি দখলে নেয় একটি হাউজিং প্রতিষ্ঠান। কোন ধরনের নকশা অনুমোদন ছাড়াই রাতারাতি দেয়াল নির্মান করে সেখানে ভাড়াটে মাস্তান দিয়ে পাহাড়া বসায় তারা। দিনরাত সেখানে ভাড়াটে মাস্তানের উপস্থিতি এবং মাদক সেবনেরও অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনায় জমির দাবীদার এক পক্ষ সৈয়দ সাবের হোসেন বাবু সিটি করপোরেশনে এবং থানায় পৃথক অভিযোগ দিয়েছে। কিন্তু সিটি করপোরশেন থেকে অননুমোদিত দেয়াল নির্মান এবং জমি জবর দখলের বিষয়ে আজ পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা নেয়নি থানা পুলিশ। এরই মধ্যে গত ৯ আগস্ট রাতে রহস্যজনক ভাবে নিখোঁজ হয় আগে থেকে ওই জমিতে অবস্থান করা অ্যাডভোকেট সৈয়দ আবুল খায়েরের একমাত্র ছেলে সৈয়দ আবুল বরকত।
বরকত নিখোঁজের ঘটনায় তার স্ত্রী জহুরা লাইজু গত ১০ আগস্ট কোতয়ালী থানায় সাধারন ডায়রী করলেও আজ পর্যন্ত তার কোন সন্ধান করতে পারেনি পুলিশ।
বরকতের বোন যুথী বেগম জানান, গত ২৮ আগস্ট জমি দখলের পর থেকেই তার ভাই জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে শংকায় ছিলো। তাকে হত্যার হুমকী দিয়েছিলো জমির দখলদার মোতালেব হাওলাদার সার্ভেয়ার। গত ৯ আগস্ট রাতে সন্তানের জন্য ওষুধ কিনতে বের হয়ে আর বাড়ি ফেরেনি সে। এরপর গত ৫ দিনেও তার কোন খোঁজ মেলেনি। কোতয়ালী থানায় সাধারন ডায়রী করা হলেও তদন্ত কর্মকর্তা কাজ শুরু করেছেন ২দিন পর। জমি দখলকারীরা তার ভাইকে গুম করতে পারে বলে সন্দেহ করছেন বরকতের স্ত্রী লাইজু ও বোন যুথী।
এদিকে এই জমির আরেক দাবীদার সৈয়দ সাবের হোসেন বাবু জানান, ২৮ আগস্ট রাতে যখন জমি দখল হয় তখন তিনি সেখানে গিয়ে বাঁধা দিয়েছেন। পুলিশ খবর দিয়েছেন। কিন্তু পুলিশ আগেভাগে ম্যানেজ হয়ে যাওয়ায় তারা আইনগত কোন ব্যবস্থা নেয়নি। পুলিশ তার অভিযোগ আমলে নেয়নি।
এ বিষয়ে কোতয়ালী মডেল থানার ওসি মো. আজিমুল করিম বলেন, এক ব্যক্তির নিখোঁজ জিডি পুলিশ গুরুত্বের সাথে তদন্ত করছে। এই ঘটনার সাথে কারো যোগসাঁজস আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। রাতের আঁধারে জমি দখল করে দেয়াল নির্মানের বিষয়ে পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছে। পুলিশ কারো অর্থ ও প্রভাবে ম্যানেজ হয়নি বলে তিনি দাবী করেন।
এদিকে রাতের আঁধারে অননুমোদিত দেয়াল নির্মানের বিষয়ে সিটি করপোরেশনে অভিযোগ দেয়া হলেও সিটি করপোরেশন থেকে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। রাতে দেয়াল নির্মানের বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে দাবী করেন সিটি করপোরেশনের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত সড়ক পরিদর্শক মো. হাবিব।
তিনি বলেন, তারা বৈধ নকশা অনুমোদন নিয়ে দেয়াল করেছেন কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে কোন ব্যতয় হলে অভিযুক্তদের নোটিশ করে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।
বর্তমানে ওই জমি নিয়ে ওই এলাকায় গুমোট পরিস্থিতি বিরাজ করছে। যে কোন সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ সহ প্রানহানীর আশংকা করছেন স্থানীয়রা।