বরিশালে পানির দরে বড় সাইজের ইলিশ

বরিশালের ইলিশ মোকামে ক্রেতা-বিক্রেতায় সরগরম। বলতে গেলে পানির দামে ইলিশ বিক্রি হচ্ছে। বরিশাল মোকামে স্মরণকালে বড় সাইজের ইলিশ এত কমদামে বিক্রি হয়নি। বিভিন্ন সাইজের ইলিশ এখন অনেটাই ক্রেতা সাধারণের হাতের নাগালে।
আড়তদাররা জানিয়েছেন, বর্ষা মৌসুমের চেয়েও বেশি ইলিশ ধরা পড়ছে নদ-নদীতে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যা ছিলো অকল্পনীয়। মৎস্য কর্মকর্তারা বলছেন, ডিমওয়ালা মা ইলিশ ও জাটকা সংরক্ষণসহ সরকারের গৃহিত নানাবিধ পদক্ষেপের কারণে নদ-নদী এখন ইলিশে পরিপূর্ণ। যার সুফল পাচ্ছেন সবাই।
বরিশালের পোর্ট রোড ইলিশ মোকামের আড়তদার মো. জহির সিকদার জানান, বর্ষা মৌসুমের চেয়েও বেশি ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে নদ-নদী ও সাগরে। আকারেও বেশ বড়। দাম একেবারে কম। বরিশালে স্মরণকালে কম দামে ইলিশ বিক্রি হচ্ছে। দাম কম থাকায় ক্রেতা-বিক্রেতায় মুখর বরিশালের ইলিশ বাজার।
ইলিশ আড়তদার মো. নাসির উদ্দিন জানান, ইলিশের প্রচুর আমদানীতে দাম ক্রেতার হাতের নাগালে চলে এসেছে। গতকাল বুধবার বরিশাল মোকামে দেড় কেজি সাইজের প্রতিকেজি ইলিশ ১ হাজার ২০০, ১২০০ গ্রাম সাইজের প্রতি কেজি ৭৮১ টাকা, কেজি সাইজের প্রতি কেজি ৭০৫ টাকা, রপ্তানীযোগ্য (৬০০ থেকে ৯০০ গ্রাম) এলসি সাইজ প্রতিকেজি ৬১২ টাকা, ৪০০ থেকে ৫০০ গ্রাম ওজনের ভেলকা প্রতিকেজি ৫০০ টাকা এবং গোটলা ৩২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।
চাকুরীজীবী রিয়াজুল করিম ও ব্যবসায়ী মোহসীন বিশ্বাস জানান, গতকাল বুধবার দুপুরে লেবুখালী ফেরীঘাট থেকে এক কেজি ৩০০ গ্রাম থেকে দেড় কেজি পর্যন্ত বিভিন্ন সাইজের ৮টিতে মোট ১০ কেজি ইলিশ কিনেছেন। প্যাকেট, বরফজাতসহ খরচ পড়েছে ১২ হাজার টাকা। এটা অন্যান্য যে কোন সময়ের চেয়ে তুলনামূলক কম হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন তারা।
বরিশাল জেলা মৎস্য দপ্তরের কর্মকর্তা (ইলিশ) ড. বিমল চন্দ্র দাস বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে নদী, সাগর ও মোহনায় প্রচুর ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। বিগত বছরগুলোতে এই সময়ে প্রতিদিন গড়ে বরিশাল মোকামে আসতো ২০০-৩০০ মন ইলিশ। এই মৌসুমে গড়ে প্রতিদিন আসছে সহস্রাধিক মন ইলিশ। মা ইলিশ ও জাটকা সংরক্ষণ, অভয়াশ্রমে মাছ শিকার শিকারে ২ মাসের ও সমূদ্রে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা এবং অবৈধ জাল বিরোধী সরকারের কঠোর কার্যক্রমের সুফল পাচ্ছেন সবাই। মৎস্য বিভাগের চলমান কার্যক্রমে জনগণ সহায়তা করলে আগামীতে ইলিশ উৎপাদন আরও বাড়বে বলে আশা করেন তিনি।