বরিশালে ভরপুর গরুর বাজারে দামে হতাশ

আসন্ন ঈদ-উল-আজহা উপলক্ষে বরিশাল মহানগরীর অস্থায়ী পশুর হাটে গরুতে ভরপুর। তবে গরুর দাম বেশি বলে অভিযোগ করেছে হাটে আসা ক্রেতারা। অন্যদিকে বিক্রিতাদের অভিযোগ হাটে ক্রেতা কম, দর্শক বেশি। চাহিদা অনুযায়ী ক্রেতারা গরুর দাম বলেন বলে জানান তারা।
বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) বরিশাল নগরীর দপদপিয়া সংলগ্ন আব্দুর রব সেরনিয়াবাত সেতুর নিচে অস্থায়ী হাটে সরেজমিনে দেখা যায়- বিকেল থেকেই বাজারে মানুষের ভীড় বাড়ছে। অন্যদিকে গতকাল রাত থেকেই হাটে গরু ভরপুর। অনেক গরু কিনে বাড়িতেও ফিরতে দেখা গেছে। অন্যদিকে গরুর পাশাপাশি হাটে বেশ সংখ্যক ছাগল দেখা গেছে।
এই হাটে বরিশালের বিভিন্ন জেলা ছাড়াও কুষ্টিয়া, রাজশাহী, মোল্লার হাটের গরু বেশি উঠেছে। এরই মধ্যে নানা আকৃতির বড় গরুগুলোর বাহারি নাম নজর কেড়েছে সবার। নজর কাড়া গরুগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য রয়েছে ৪ টি। একটি সাদা রঙের ‘রাজা’, কালো রঙের ‘কালা’, অন্য দুটির নাম পাওয়া যায়নি।
রাজার মালিক মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘আমার বাড়ি কাঠালিয়া থানা ঝালকাঠি জেলা। আমি চাকরি করি বরিশালে। আমার স্ত্রী এবং আমার সন্তানরা মিলে গরুটা কে দেখাশোনা করছে লালন পালন করছে। সন্তানের মতো ভালবাসছি গরুটারে। আমরা যা খাইছি ওরেও তাই খাইতে দিছি। একটু আগেও ওরে আম- একহালি কলা খাওয়াছি। গরুটার নাম ‘রাজা’ রাখছে আমার বাচ্চারা।
তিনি আরো বলেন, ‘টাকার জন্যই মূলত গরুটিকে বিক্রি করতে চাইছি। এত দূর থেকে গরুটি নিয়া আসছি কেউ জিগাস করেনা। সবাই গরুর সুন্দর্য দেখে চলে যায়। এই হাটে দাম পাচ্ছি না। তাই দাম কমিয়ে মাত্র ৫ লাখ টাকা চাইছি। তবু কাষ্টমার নাই ’
অন্যদিকে কালো রঙের ষাঁড় ‘কালা’র মালিক মো. সবুজ বলেন, ‘আমার গরুটি বেশ বড় এবং লম্বা। গলাচিপা থেকে দুইডা গরু নিয়া এই বাজারে আসছি। গরুটার দাম চাইছি ৭ লাখ টাহা। এক জনে ৫ লাখ কইছে কিন্ত তার কাছে বিক্রি করি নাই।’ তবে তিনি মনে করেন বাজারে ক্রেতা আসা শুরু করেছে। ক্রেতার সংখ্যা আরো বাড়বে এবং চড়া দামেই তার শখের গরুটি বিক্রি করতে পারবেন।
এদিকে রাজশাহী থেকে ১৬ টি গরু নিয়ে আসা এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘গত সোমবার আমি এই বাজারে গরু নিয়ে আসছি। এখন পর্যন্ত একটি গরুও বিক্রি করতে পারি নাই।’ তবে তিনি হতাশ হয়ে তার ১৬ টি গরুর দাম কমিয়ে বিক্রি করতে চাচ্ছেন। এদিকে তার গরুগুলোর মধ্যে একটি ১০ মণ ওজনের গরু মাত্র ২ লাখ ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি করতে চাচ্ছেন।
বাজারে আসা এক ক্রেতা মো. শিহাব বলেন, ‘বাজারে আসছি, দেখলাম গরু। এই বাজারে বেশ ভালোই গরু উঠেছে। এটা আনন্দের বিষয়। শহরের মধ্যে এমন বাজার পেয়ে আমরা খুশি। তবে গরুর মালিকরা গরু দাম বাড়িয়ে চাচ্ছে। যা আমাদের সাধ্যের বাইরে। তাই ভাবছি আরো পরে গরু কিনবো। বাজারের দর আরো দেখবো।’
এদিকে বাজারে ২৪ ঘন্টা সিসি ক্যামেরা এবং জোরদার নিরাপত্তার কথা জানিয়ে ইজারা দার মো. রনি বলেন, ‘একে একে বাজারে গরু আসছে। আজ থেকে ক্রেতারাও ভীড় করছে। আশা করি আগামিকাল আরও বাড়বে। খাজনার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন- ‘আমাদের এখানে শতকরা হিসেবে ৫ টাকা করে রাখা হয়। যা এক লাখে ৫ হাজার।’