মিন্নির পক্ষে লড়ার জন্য নেই কোনো আইনজীবী

মিন্নির পক্ষে লড়ার জন্য নেই কোনো আইনজীবী
বরগুনায় প্রকাশ্য দিবালোকে রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যার চাঞ্চল্যকর মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া নিহতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির পক্ষে লড়ার জন্য কোনো আইনজীবীকেই পাওয়া যাচ্ছে না। আজ বুধবার দুপুরে মিন্নিকে কড়া পুলিশ প্রহরায় আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির মিন্নিকে ৭ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন। অন্যদিকে মিন্নির পক্ষে তার বাবা মোজাম্মেল হোসেন জামিন আবেদন করেন। কিন্তু আদালত তা নামঞ্জুর করে দেয়। আদালত সূত্র জানায়, আজ বেলা তিনটা ১০ মিনিটে পুলিশ মিন্নিকে বরগুনার বিচারিক হাকিম মো. সিরাজুল ইসলাম গাজীর আদালতে হাজির করে। এ সময় আদালতের চারপাশে কড়া পুলিশ প্রহরা ছিল। আদালতের বাইরে মিন্নির মা ও আত্মীয়-স্বজনেরা উপস্থিত থাকলেও কারো সঙ্গে তাঁকে কথা বলতে দেওয়া হয়নি। আদালতের কার্যক্রম শেষ হওয়ার পর বেলা পৌনে চারটার দিকে মিন্নিকে আদালত থেকে বের করে কড়া প্রহরায় পুলিশ লাইনসে নেওয়া হয়। মিন্নির পরিবারের ঘনিষ্ঠ কয়েকজন জানিয়েছেন, গতকাল পুলিশ মিন্নিকে ধরে নিয়ে যাওয়ার পর থেকেই মিন্নির বাবা এবং আত্মীয় স্বজন হন্নে হয়ে একজন আইনজীবী খুঁজছেন। কিন্তু মিন্নির পক্ষে লড়ার জন্য কোনো আইনজীবীকেই রাজি করাতে পারছেন তারা। রিফাত হত্যা মামলায় রাতারাতি ভিলেনে পরিনত হয়েছেন মিন্নি। কোনো আইনজীবী তার পক্ষে আদালতে দাঁড়ালে তিনি বিতর্কিত হবেন। মূলত একারণেই স্থানীয় আইনজীবীরা মিন্নির পক্ষে লড়ছেন না বলে জানা গেছে। আদালত প্রাঙ্গণে উপস্থিত মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর গণমাধ্যমকে বলেন, মিন্নি মানসিকভাবে অসুস্থ। এটা জানিয়েই আদালতে মিন্নির জামিন আবেদন করেছিলাম। কিন্তু জামিন না মঞ্জুর করে তার রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় মিন্নিকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গতকাল মঙ্গলবার রাতে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বরগুনা পুলিশ লাইনে সকাল ১০টা থেকে জিজ্ঞাসাবাদের পর রাত সাড়ে ৯টার দিকে সংবাদ সম্মেলন ডেকে তাকে গ্রেপ্তারের কথা জানান বরগুনার পুলিশ সুপার (এসপি) মারুফ হোসেন। গতকাল এসপি বলেন, “আমরা মিন্নিকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। সাক্ষী হিসেবে তার জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে তার সম্পৃক্ততা পাওয়া যাওয়ায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।” উল্লেখ্য, গত ২৬ জুন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে রিফাত শরীফকে সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এই ঘটনার একটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে ব্যাপক আলোড়ন তৈরি হয়। এ মামলার প্রধান আসামি সাব্বির আহম্মেদ ওরফে নয়ন বন্ড ২ জুলাই পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। মামলার এজাহারভুক্ত ছয় আসামিসহ গতকাল পর্যন্ত ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে