মেহেন্দিগন্জে জানাজা-দাফনে অংশ নেয়নি স্বজনরা,প্রশাসনের সহায়তায় দাফন

বরিশালে করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছে ভেবে লাশের কাছে যাননি পরিবারের সদস্যরা। এমনকি মৃত ব্যক্তির জানাজা এবং দাফনেও অংশ নেয়নি পরিবারের একান্ত স্বজনরা। পরে জেলা প্রশাসনের নির্দেশে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানাজা ও দাফরেন ব্যবস্থা করেছেন।
বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার শ্রীপুর গ্রামে করোনার উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু হওয়া মিজানুর রহমানের (৪২) লাশ দাফনে এগিয়ে আসেননি তাঁর নিকট স্বজনরা।
গত শুক্রবার রাত একটার দিকে উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় তার লাশ দাফনের ব্যবস্থা করা হয়।
বরিশাল জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের মিডিয়া সেল জানায়, গত ৫ জুন তারিখ বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের বাহেরচর গ্রামের আনন্দবাজারস্থ চরফেনুয়া ব্রীজসংলগ্ন জমাদ্দার বাড়ির মো. মিজানুর রহমান জমাদ্দার চিকিৎসার জন্য বরিশাল যাওয়ার পথে বিকাল আনুমানিক সোয়া তিনটার সময় আকস্মিক মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর পূর্বে বেশ কিছুদিন তিনি জ্বর ও গলাব্যথায় ভুগছিলেন।
করোনা সন্দেহে তাঁর পরিবার ও প্রতিবেশীরা মৃতের দাফনকাজ করতে চাচ্ছিলেন না। এমতাবস্থায় মৃতের স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীদের সন্দেহ ও মতদ্বৈধতা দূরীকরণের স্বার্থে বরিশালের জেলা প্রশাসক এস এম অজিয়র রহমান এর নির্দেশে মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পিজুস চন্দ্র দে এর তত্ত্বাবধানে একটি স্বেচ্ছাসেবী দল বিশ^স্বাস্থ্য সংস্থার প্রটোকল মেনে মৃতের লাশ দাফন করেন। রাত একটায় তার দাফন কাজ সম্পন্ন হয়। দাফন কাজে শ্রীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ মোল্লা সার্বিক সহযোগিতা করেন।
জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্বেচ্ছায় দাফন কাজে অংশগ্রহণকারী টিমের সদস্যরা হলেন এইচ এম আল-আমীন, মাওলানা মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, এইচ এম রবিউল ইসলাম, মোহাম্মদ আবুল হোসেন ও মোহাম্মদ জামাল মাঝি। এছাড়াও মেহেন্দিগঞ্জ হাসপাতাল লাশের গোসলসহ সার্বিক বিষয়ে টিমের সদস্যদের সংক্ষিপ্ত প্রশিক্ষণ, পিপিই ও প্রয়োজনীয় সুরক্ষা সামগ্রী দিয়ে সহযোগিতা করেন। এসময় আইনশৃংখলা রক্ষার কাজে শ্রীপুর ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশ ও আনসার সদস্যদের একটি সুসজ্জিত দল সহযোগিতা করেন।
মিজানুর রহমানের বাড়ি লকডাউন এবং তাকে চিকিৎসা দেয়া পল্লী চিকিৎসক ও যারা ধরাধরি করে স্পীডবোটে তুলেছেন তাদের হোম কোয়ারন্টোইনে রাখা হয়েছে বলে জানান ইউপি চেয়ারম্যান।