সরকারি বরিশাল কলেজের নামকরণ নিয়ে পুলিশ কমিশনার বরাবর স্মরকলিপি
অশ্বিনী কুমার দত্তের বাসভবনে পরিচালিত সরকারি বরিশাল কলেজের নাম ‘মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্ত’র নামে করার সরকারি প্রস্তাবনা বাস্তবায়নের দাবি জোরদার হচ্ছে। কলেজের নামকরণ নিয়ে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের কাছেও পৃথক স্মরকলিপি দেওয়া হয়।
আজ রোববার দুপুর ১২টায় মেট্রোপলিন পুলিশ কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খানের হাতে বাস্তবায়ন কমিটির পক্ষ থেকে ওই স্মারকলিপি তুলে দেওয়া হয়।
সরকারি বরিশাল কলেজের নাম পরিবর্তন করে সরকারি মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্ত কলেজ নামাকরন বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মানবেন্দ্র বটব্যাল, যুগ্ম আহ্বায়ক কেএসএ মহিউদ্দিন মানিক (বীরপ্রতীক), সদস্য সচিব সাইফুর রহমান মিরণ, সমন্বয়কারী স্নেহাংশু বিশ্বাস, কমিটির সদস্য ও বরিশাল সচেতন নাগরিক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক শাহ শাজেদা, বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশানের সভাপতিম-লীর সদস্য শুভংকর চক্রবর্তী, বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সভাপতিম-লীর সদস্য আজমল হোসেন লাবু, বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি সুশান্ত ঘোষ, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি জেলা সভাপতি নজরুল হক নিলু, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সভাপতি অ্যাভোকেট একে আজাদ, সমাজতান্ত্রিক দল বসদের সদস্য সচিব ডা. মনিষা চক্রবর্তী, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন জেলা সভাপতি সম্পা দাসসহ অন্যরা।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে, অবিভক্ত ভারতবর্ষের স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব বাংলাদেশের তথা বরিশালের কৃতি সন্তান মহাত্মা অশি^নী কুমার দত্ত। তাঁর নামে বরিশাল সরকারি কলেজের নামকরণের দাবিতে কয়েক যুগ ধরে বরিশালের সর্বস্তরের মানুষ আন্দোলন করে আসছে। ওই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় সরকারি বরিশাল কলেজের নামকরণ মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্তের নামে করে গেজেট নোটিফিকেশন জারি হওয়া অনেকটা এগিয়ে গেছে। এটা বরিশালবাসীর দীর্ঘদিনের আন্দোলন ও দাবির স্বীকৃতিও বটে। তাই অবিলম্বে এই প্রস্তাবনা বাস্তবায়ন হওয়া উচিত।
পাকিস্তান সরকারের আমলে মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্তের বাসভবনটি সরকার রিকিউজিশন করে এবং তিনি সর্বদা ধর্মনিরপেক্ষতায় বিশ্বাসী ছিলেন বলে তার বাসভবনে ব্রজমোহন কলেজের কসমোপলিটান ছাত্রাবাস প্রতিষ্ঠা করা হয়। ১৯৬৬ সনে তার বাসভবনে প্রতিষ্ঠা করা হয় ‘বরিশাল নৈশ মহাবিদ্যালয়’। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর নৈশ কলেজটিকে প্রথমে বরিশাল দিবা ও নৈশ কলেজে রূপান্তর করা হয়। পরে এটির নামাকরণ করা হয় ‘বরিশাল কলেজ’। কলেজটিকে ১৯৮৬ সনে জাতীয়করণ করা হলে কলেজটির নামাকরণ করা হয় ‘সরকারি বরিশাল কলেজ’। ১৯৯০ সনে অশ্বিনী কুমারের বাসভবনটি ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে ফেলা হয়। বর্তমান জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নিকট একই দাবি করা করা হলে বিষয়টি তদন্ত করে গত ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ পাঠিয়েছেন। ওই সুপারিশের ভিত্তিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় নীতিগতভাবে ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এই পদক্ষেপ দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি করা হয়েছে স্মারকলিপিতে।