সাংবাদিক হাবীবুর রহমানের মৃত্যুর ঘটনা সুষ্ঠু তদন্তের দাবি

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও দৈনিক সময়ের আলোর সিনিয়র রিপোর্টার হাবীবুর রহমানের অকাল মৃত্যুর ঘটনাটি অবিলম্বে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত কারণ তুলে ধরার দাবি জানিয়েছেন তার সাংবাদিক সহকর্মী, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ ও পরিবারের সদস্যরা।
শনিবার সেগুনবাগিচায় ডিআরইউ আয়োজিত এক শোকসভায় বক্তারা এ দাবি জানান।
শোকসভায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, হাবীবুর রহমান প্রতিভাবান সাংবাদিক ছিলেন। তার মতো সদালাপি ছেলে অকালে মারা যাবে তা মেনে নেয়া যায় না। তাকে নিয়ে শোকসভা করতে হবে কখনো ভাবিনি। ১২-১৩ বছর ধরে তার সাথে যোগাযোগ। প্রায় প্রতিদিন সংবাদ বা কোনো ঘটনার প্রতিক্রিয়ার জন্য ফোন করতো।
সাংবাদিক হাবীবের পরিবারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা হতাশ হবেন না। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা সব সময় সাংবাদিক বান্ধব। তিনি সময় পেলেই সাংবাদিকদের সাথে বসেন। প্রধানমন্ত্রী থাকতে হতাশ হওয়ার কারণ নেই। যতদ্রুত সম্ভব আমরা হাবীবের স্ত্রী ও ভাইয়ের চাকরির ব্যবস্থা করার চেষ্টা করবো। একইসঙ্গে হাবীবের পরিবার যাতে দ্রুত আর্থিক সহায়তা পায় সেই ব্যাপারেও তিনি সবাইকে আশ্বস্থ করেন।
ডিআরইউ সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম হাসিবের সঞ্চালনায় সভাপতির বক্তব্যে ডিআরইউর সভাপতি নজরুল ইসলাম মিঠু বলেন, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির পক্ষ থেকে সাধ্যমতো তার পরিবারের পাশে থাকার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমি আশা করবো ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন, বিএফউজে এবং প্রেস ক্লাব হাবীবুর রহমানের পরিবারের জন্য একটি তহবিল তৈরি করার ব্যবস্থা নিবেন।
একইসঙ্গে সরকার ও আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের কাছে হাবীবের স্ত্রী ও তার ছোট ভাইয়ের একটি চাকরির দাবি জানান তিনি।
হাবীবুর রহমানের মৃত্যুর তদন্ত দাবি করে ডিআরইউ সভাপতি বলেন, ১০ দিন হয়ে গেলো, যারা তদন্ত করছেন এখন পর্যন্ত কেউ আমাদের বা পরিবারের সাথে যোগাযোগ করেননি। হাবীবের মৃত্যুটা কিভাবে হয়েছে তদন্তের মাধ্যেমে আমরা তা জানতে চাই। ঘটনার আইনি সমাধান চাই।
হাবীবুর রহমানের স্ত্রী হাসি আক্তার রিমি কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, হাবীবের মৃত্যু নিয়ে যে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে এটা নিয়ে আমার একার পক্ষে কিছু করা সম্ভব নয়। আপনারা আমার পাশে থাকবেন। হাবীব যে নেই এটা এখনো বিশ্বাস করতে পারি না, হাবীবকে কেউ ভুলে যাবেন না।
এছাড়াও শোকসভায় বক্তব্য রাখেন, আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুভাষ চন্দ (বাদল), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবুল মনসুর আহমেদ, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব কে এম শাখাওয়াত মুন, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব দীপ আজাদ ও যুগ্ম মহাসচিব শেখ মামুনুর রশীদ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ বিট পরিবারের পক্ষ থেকে সাংবাদিক উত্তম চক্রবর্তী ও অমরেশ রায় এবং সময়ের আলো পরিবারের পক্ষ থেকে সিটি এডিটর সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, ডিআরইউর সাবেক সভাপতি শাহজাহান সরদার, শাহেদ চৌধুরী, মুরসালিন নোমানী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ ও সৈয়দ শুকুর আলী শুভ।
শোকসভায় ডিআরইউরবর্তমান কার্যনির্বাহী কমিটির যুগ্ম সম্পাদক শাহনাজ শারমীন, অর্থ সম্পাদক এস এম এ কালাম, দপ্তর সম্পাদক রফিক রাফি, সাংস্কৃতিক সম্পাদক নাদিয়া শারমিন, আপ্যায়ন সম্পাদক মুহাম্মাদ আখতারুজ্জামান ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক মসিউর রহমান খান উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ১৯ জানুয়ারি রাত ২টার দিকে রাজধানীর হাতিরঝিলে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হন সাংবাদিক হাবীবুর রহমান। তিনি দীর্ঘদিন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ বিট কাভার করেছেন।