অন্তর্বর্তী সরকার চায় গণতন্ত্র মঞ্চ

সরকারের পদত্যাগ, সংসদ ভেঙে দেওয়াসহ ১৪ দফা দাবি আদায়ে শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীতে দিনব্যাপী জনসংযোগ এবং পথসভার কর্মসূচি দিয়েছে গণতন্ত্র মঞ্চ।
বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে নাগরিক ঐক্যের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গণতন্ত্র মঞ্চ কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে সংবাদমাধ্যমে দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।
সভায় মঞ্চের নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘দেশের অর্থনীতির এই মহা সংকটের মধ্যে বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি সামগ্রিকভাবে দেশকে আরও সংকটের দিকে নিয়ে যাবে। জনজীবন আরও বিপর্যস্ত হবে। সরকার এবং সরকারি দলের মদতপুষ্টদের লুটপাটের খেসারত দিচ্ছে সাধারণ জনগণ। রেন্টাল –কুইক রেন্টাল বিদ্যু কেন্দ্র স্থাপনের অনুমোদন এবং দফায় দফায় এর মেয়াদ বাড়ানোর মাধ্যমে কেবলমাত্র ক্ষমতাসীনদের অনুগত এবং মদতপুষ্ট ব্যবসায়ীদের ব্যাপক আয়ের পথ তৈরি করে দেওয়া হয়েছে।’
তারা বলেন, ‘কোনো বিদ্যুৎ না দিয়েই ১১ বছরে সরকার কোম্পানিগুলোকে ক্যাপাসিটি চার্জের নামে প্রায় ৯০ হাজার কোটি টাকা দিয়েছে। সর্বশেষ ৩ বছরেই দেওয়া হয়েছে ৫৪ হাজার কোটি টাকা। এই স্বজনতোষী ব্যবস্থার বৈধতা দিতে সংসদের মাধ্যমে ইনডেমনিটি দেওয়া হয়েছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী স্বৈরাচার সরকারের ১৪ বছরের শাসনামলে খুচরা এবং পাইকারি উভয় পর্যায়ে ১১ বার বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে।’
নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘এমনিতেই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের অসহনীয় দামে জনজীবনে নাভিশ্বাস উঠছে। জনগণের ক্রয়ক্ষমতা কমেছে। এক মাসের কম সময়ের ব্যবধানে আবারও বাড়ানো হল বিদ্যুতের দাম। একদিকে শিল্পে উৎপাদন খরচ বাড়ার ফলে দ্রব্যমূল্য বাড়ছে, অন্যদিকে ভোক্তা পর্যায়েও সরাসরি অতিরিক্ত ব্যয়ের চাপ তৈরি হয়েছে। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি এবং ভোক্তা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর ফলে অতিরিক্ত খরচ সমন্বয় করতে গিয়ে জনগণের ক্রয় ক্ষমতা কমবে। যার প্রভাব পড়বে দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতে।
তারা অভিযোগ করে বলেন, ১৪ বছরে ১০ লাখ কোটি টাকার বেশি পাচার হয়েছে। সরকারের কাছে দেশ চালানোর টাকা নেই। মাসে মাসে টাকা ছাপিয়ে তারা ব্যয় নির্বাহ করছে। সার্বিকভাবে দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দেশকে দেউলিয়াত্বের পথে ধাবিত করছে এই অবৈধ ক্ষমতাসীন সরকার।
দেশ-অর্থনীতি-দেশের মানুষকে বাঁচাতে এখনই সরকারের পতন ঘটিয়ে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করতে হবে বলেও দাবি করেন তারা।
সভায় বক্তব্য দেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম, গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নূর, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদউদ্দিন মাহমুদ স্বপন, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার, ভাসানী অনুসারী পরিষদের সদস্য সচিব হাবিবুর রহমান রিজু, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য আকবর খান।
জোনায়েদ সাকি দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমাদের ১৪ দফা দাবির স্বপক্ষে জনমত গড়ে তুলতে সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনের পাশাপাশি নিজেদের কর্মসূচিও থাকবে। পাশাপাশি রাজধানী ঢাকার পরে সারাদেশে এ ধরণের গণসংযোগ ও বিভিন্নস্থানে পথসভা করবো আমরা।’