করোনায় শ্রমজীবী মানুষের দিকে নজর দিতে হবে

করোনায় শ্রমজীবী মানুষের দিকে নজর দিতে হবে

করোনা বৈশ্বিক সমস্যা। গোটা দুনিয়ায় মহামারী আকার ধারণ করেছে। বাংলাদেশেও করোনা এক দুর্যোগের নাম। দিন দিন করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। বাড়ছে স্বাস্থ্য ঝুঁকি। সরকার এবং স্বাস্থ্য বিভাগ নাগরিকদের সচেতন করতে ব্যাপক উদ্যোগ গ্রহণ করছে। যা অব্যাহত আছে। কিন্তু আমরা এই মহামারীর ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন হতে পারছি না। মানুষকে যতো ঘরে থাকতে বলা হচ্ছে ততোই রাস্তাঘাট, হাট-বাজারে বাড়ছে ভীড়। লকডাউন দিয়েও মানুষ ঘরে রাখা যাচ্ছে না। মানুষের স্বাস্থ্যবিধি না মানার প্রতিযোগিতা বাড়ছে করোনার মতোই। তারপরও লকডাউন মানাতে চেষ্টা চলছে। তবে লকডাউন কার্যকর করতে কর্মহীন শ্রমজীবী মানুষের দিকে নজর দিতে হবে। গত বছর লকডাউন শুরুর সঙ্গে সঙ্গে সরকার কর্মহীন শ্রমজীবী মানুষের জন্য ত্রাণসহ নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছিল। এবার সেটা তেমনভাবে লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। 

একদিকে কর্মহীন মানুষের আহাজারী আর একদিকে রমজানের সিয়াম সাধন। কে কার সিয়াম সাধন করবে বোঝা যাচ্ছে না। সব বন্ধ। সমস্যা হচ্ছে রোজাদার কোভিড যোদ্ধাসহ সাধারণ মানুষের। ব্যবসায়ীরাও হাসফাঁস করছে। ইফতার পাওয়া না পাওয়া নিয়ে ক্ষোভ দেখা দিচ্ছে। এসব নানা অজুহাতে দিনের বেলা চলে বাজারের মিছিল। করোনাকে এরা পাত্তাই দিতে চাইছে না। এখনও সময় আছে আমাদের আরো একটু সতর্ক হওয়ার। তার সঙ্গে সঙ্গে কর্মহীন মানুষের দিক বিবেচনায় নেওয়া দরকার।

গতকাল বরিশাল নদী বন্দরের কর্মহীন লঞ্চে মানুষ ডেকে তোলা শ্রমিকরা আহাজারী করছে। লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকায় তারা বিপাকে পড়েছেন। লঞ্চ কর্তৃপক্ষও তাদের সহযোগী হচ্ছেন না। গত বছর দুই দঢায় তারা জেলা প্রশাসন থেকে খাদ্য সহায়তা পেয়েছিলেন। এবছর সেই সহযোগিতার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন। একই অবস্থা নদীবন্দর কেন্দ্রীক ভ্যান চালকরাও। তাদেরও সহযোগিতা দিয়েছিল জেলা প্রশাসন। সহযোগিতা পেয়েছিল সংবাদপত্র বিক্রয় কর্মীরাও। এমন অনেক পেশার মানুষ কাজ না থাকায় অসহায় হয়ে পড়েছেন। এসব দিনমজুর কর্মজীন শ্রমিকরা নানা অজুহাতে কখনো রিকশা, কখনো অন্য কোন কাজ নিয়ে রাস্তায় বের হচ্ছেন। করোনা মহামারী নিয়ন্ত্রণে সরকারের সকল উদ্যোগের সঙ্গে কর্মহীন শ্রমিকদের প্রতি বিশেষ নজর দেওয়া দরকার।

আমরা চাই, করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে কঠোর লকডাউন বাস্তবায়ন হোক। করোনায় আমাদের সর্বোচ্চ সচেতন ও সতর্ক থাকতে হবে। সেই সঙ্গে কর্মহীন শ্রমজীবী মানুষের ন্যুনতম খাদ্য নিশ্চয়তার ব্যবস্থা করা হোক। করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে কেবল সরকার নয়, প্রতিটি নাগরিকের সমান দায়িত্ব নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে।