সাহসিকা জননী জাহানারা ইমামের জন্মদিনে শুভেচ্ছা

সাহসিকা জননী জাহানারা ইমামের জন্মদিনে শুভেচ্ছা
আজ শুক্রবার ছিল সাহসিকা জননী জাহানারা ইমামের জন্মদিন। শহীদ জননী জাহানারা ইমামের ৯১তম জন্মদিনে শুভেচ্ছা। ১৯২৯ খ্রিষ্টাব্দের ৩ মে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার সুন্দরপুরে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে তিনি ছেলে রুমী ও স্বামী শরিফ ইমামকে হারান। স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে তিনি হয়ে ওঠেন মুক্তিযোদ্ধাদের মা। তিনি সব মুক্তিযোদ্ধার মধ্যে তার শহীদ সন্তান রুমীর ছায়া দেখতেন। সাহিত্যিক ও সংগঠক হিসেবেও তার অসামান্য অবদান রয়েছে। তার লেখা 'একাত্তরের দিনগুলি' শুধু দিনলিপি বা স্মৃতিচারণ নয়, এটি মুক্তিযুদ্ধের নয় মাসের জীবন্ত ইতিহাস। দেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থান রোধে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। ১৯৯১ খ্রিষ্টাব্দের ২৯ ডিসেম্বর যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযমকে জামায়াতে ইসলামীর আমির ঘোষণা করলে এর বিরুদ্ধে গড়ে ওঠে প্রতিবাদ-প্রতিরোধ আন্দোলন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী ৭০টি রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের সমন্বয়ে ১৯৯২ খ্রিষ্টাব্দের ২১ জানুয়ারি '৭১-এর ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি' গঠিত হয়। ১১ ফেব্রুয়ারি গঠিত হয় মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন ও একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল জাতীয় সমন্বয় কমিটি। জাহানারা ইমাম এই কমিটির আহ্বায়ক নির্বাচিত হন। তার নেতৃত্বেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে গণআন্দোলন গড়ে ওঠে। ১৯৯২ খ্রিষ্টাব্দের ২৬ মার্চ ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বসে ঐতিহাসিক 'গণআদালত'। শহীদ জননীর সভাপতিত্বে সেদিন ঘাতকদের হোতা গোলাম আযমের প্রতীকী বিচার হয়। ১৯৯৪ খ্রিষ্টাব্দের ২৬ জুন ক্যান্সারে আক্রান্ত জাহানারা ইমাম যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান ডেট্রয়েটের একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। তার লেখা বইয়ের মধ্যে 'সাতটি তারার ঝিকিমিকি', 'নগরী', 'গজ কচ্ছপ', 'জীবনমৃত্যু', 'বীরশ্রেষ্ঠ', 'বুকের ভিতর আগুন', 'নিঃসঙ্গ পাইন', 'ক্যান্সারের সঙ্গে বসবাস', 'বিদায় দে মা ঘুরে আসি' উল্লেখযোগ্য।