জীবনযাত্রা স্বাভাবিক রেখেই লকডাউন করা হবে

জীবনযাত্রা স্বাভাবিক রেখেই লাল চিহ্নিত ছোট্ট ছোট্ট এলাকায় লকডাউন করার নির্দেশনা রয়েছে। করোনা যে কোন সময়ের চেয়ে ভয়াবহ রূপ ধারণ করছে। বরিশাল মহানগরসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলা লাল তালিকার মধ্যে পড়েছে। স্বাভাবিকভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ছাড়া এই মহামারি থেকে রক্ষ পাওয়া কঠিন। লাল চিহ্নিত জোনে লকডাউন হবে।
আজ বরিশালে ক্যান্সার, কিডনী রোগ, লিভার সিরোসিসে, স্ট্রোকে প্যারালাইজড রোগ, জন্মগত হৃদরোগ এবং থ্যালাসেমিয়াসহ দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের হাতে অনুদানের চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন বরিশালের জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান।
আজ ১৮ জুন বৃহষ্পতিবার দুপুর ১২টায় জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে বরিশালের ১৮০ জন রোগীকে ৯০ লাখ টাকার আর্থিক সহায়তার চেক প্র্রদান করেন জেলা প্রশাসন ও সমাজসেবা অধিদপ্তর বরিশাল।
জেলা সমাজ সেবা অধিপ্তরের আয়োজনে এবং জাতীয় সমাজকল্যাণ পরিষদ হতে প্রদত্ত অনুদানের চেক রোগী ও স্বজনদের হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে তুলে দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান বলেন, শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং স্বাস্থ্যবিধি মানার ওপর আমাদের বেশি বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। সেটা কেবল বরিশালের মানুষ মানলে হবে না। লঞ্চ-বাসে যারা আসছেন তাদের সুরক্ষা ব্যবস্থার দিকে জোর দিতে হবে। ঢাকা নদীবন্দরসহ সকল বাস টার্মিনালে কঠিনভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানতে ব্যবস্থা নিতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মানা ছাড়া করোনা থেকে রক্ষা পাওয়া কঠিন। একই সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ এবং বাড়িতে গরম পানি, গরম ভাপ নিয়ে প্রতিরোধ করতে হবে। নিজের সুরক্ষায় নিজেকেই উদ্যোগী হতে হবে।
লাল চিহ্নিত এলাকা লকডাউনের ব্যাপারে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান বলেন, সরকার লাল চিহ্নিত এলাকাগুলোতে লকডাউন করার নির্দেশনা দিয়েছে। তবে লকডাউন করতে গিয়ে যেন স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যহত না হয় সেদিকেও নজর রাখতে বলেছে। বরিশাল মহানগরসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় লকডাউন দেওয়ার ব্যাপারে সিটি করপোরেশন, সিভিল সার্জন, পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সমন্বিতভাবে লকডাউন কার্যকর করা হবে। এই ক্ষেত্রে কেবল প্রশাসন নয় নাগরিকদেরও সহযোগী হয়ে দায়িত্ব পালন করতে হবে। আমরা চাই ছোট্ট ছোট্ট জোন লকডাউন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগ নিতে। অবশ্যই লকডাউন এলাকার বাসিন্দাদের দৈনন্দিন নিত্যপ্রযোজনীয় দ্রব্যের জন্য সমস্যায় পড়তে না হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখেই লকডাউন করা হবে।
সমাজ সেবা অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ্য থেকে ক্যান্সার, কিডনী রোগ, লিভার সিরোসিসে, স্ট্রোকে প্যারালাইজড রোগ, জন্মগত হৃদরোগ এবং থ্যালাসেমিয়াসহ দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত বরিশাল সিটি করপোরেশনসহ জেলার ১০ উপজেলার ১৮০ জন রোগীর হাতে অর্থের চেক হস্তান্তর করা হয়। প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা হিসেবে ৯০ লাখ টাকার চেক বিতরণ করা হয়।
চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবত বরিশাল প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসেন, সমাজ সেবা অধিদপ্তর বরিশালের উপ-পরিচালক আল মামুন তালুকদার, জেলা প্রবেশন কর্মকর্তা সাজ্জাত পারভেজ।
অনুষ্ঠানে শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত বরিশাল প্রেসক্লাবে কোষাধ্যক্ষ মো. মোশাররফ হোসেনের চিকিৎসায় ৫০ হাজার টাকার চেক দেওয়া হয়। মোশাররফ হোসেন কীডনি সমস্যায় ভুগছেন। তার দুটি কিডনি প্রতিস্থাপন করতে হবে।
এব্যাপারে জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান বলেন, মোশাররফ হোসেনের চিকিৎসা জেলা প্রশাসন আরও সহযোগী হওয়ার চেষ্টা করবে।